জুমার-খুৎবা

ইসলামে হজ্বের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ বদিউল আলম রিজভি

জুমার খুতবা

২৭জিলক্বদ|১৪৪২হিজরি|শুক্রবার|৯ জুলাই| ২০২১ইং

সম্মানিত মুসলিম ভাইয়েরা! আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করুন! জেনে রাখুন, হজ্ব ইসলামের পঞ্চম বুনিয়াদের অন্যতম স্তম্ভ। আর্থিক ও শারীরিক দিক থেকে সামর্থবানদের উপর জীবনে একবার হজ্ব পালন করা ফরয।

পবিত্র কুরআনের আলোকে হজ্ব:

পবিত্র হজ্ব ব্রত পালন করা একটি ফরয ইবাদত। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেছেন, “মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ আছে আল্লাহর উদ্দেশ্যে সে ঘরের হজ্ব করা তার উপর ফরয। (সূরা: আল ইমরান, আয়াত: ৯৭)

 

আল্লাহ তা’আলা আরো এরশাদ করেছেন, “আর তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানের জন্য হজ্ব এবং ওমরা পূর্ণরূপে আদায় কর।” (সূরা: বাক্বারা, আয়াত: ১৯৬)

হজ্ব শব্দের আভিধানিক ও শরয়ী অর্থ:

হজ্ব শব্দটি আরবি এর আভিধানিক অর্থ ইচ্ছা বা সংকল্প করা। শরীয়তের পরিভাষায় আল্লাহ ও রাসূলের সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে শরীয়তের বিধান অনুসারে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দ্দিষ্ট স্থান তথা বায়তুল্লাহ শরীফ ও সংশ্লিষ্ট স্থানসমূহ যিয়ারত করার সংকল্প করাকে হজ্ব বলা হয়। (ফতোওয়ায়ে শামী, ২য় খন্ড)

 

নবম হিজরীতে হজ্ব ফরজ হয়। হজ্ব ফরজ হওয়াটা পবিত্র কুরআন দ্বারা অকাট্যরূপে প্রমাণিত। ফরজ অস্বীকারকারী কাফির। হজ্ব জীবনে একবার মাত্র ফরজ। (ফাতওয়া-এ আলমগীরি, খন্ড ১ম, পৃ: ২১৬, বাহারে শরীয়ত, ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃ: ১০৩৬)

 

হাদীস শরীফের আলোকে হজ্বের গুরুত্ব:

প্রসিদ্ধ সাহাবী হরযত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে হজ্ব পালন করে এ অবস্থায় সে অশ্লীলতা ও পাপাচারে লিপ্ত হয়নি। সে নবজাত শিশুর ন্যায় নিস্পাপ হয়ে হজ্ব থেকে প্রত্যাবর্তন করে। (বুখারী, খন্ড ১ম, পৃ: ২০৬, হাদীস নং ১৬৯০, মুসলিম, খন্ড ১ম, পৃ: ৪৩৬, আনোয়ারুল বয়ান, খন্ড ৩য়, পৃ: ২৯৪, হাদীস নং ২৪০৪)

মকবুল হজ্বের প্রতিদান জান্নাত:

আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে জান্নাতই মু’মিনের কাঙ্ক্ষিত ঠিকানা। সর্বাধিক হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, এক ওমরা থেকে আর এক ওমরা পর্যন্ত মধ্যবর্তী গুনাহগুলোর জন্য কাফফারা, ক্রটিহীন মকবুল হজ্বের প্রতিদান হলো একমাত্র জান্নাত। (বুখারী, খন্ড ১ম, পৃ: ৫৮৬, হাদীস নং ১৭৭৩, মুসলিম ৭.৭১, হাদীস নং ২৪০৩, বাহারে শরীয়ত, ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃ: ১০৩১, আনোয়ারুল বায়ান, খন্ড ৩য়, পৃ: ২৯৫)

 

বৈশ্বিক করোনা মহামারী ও হজ্বব্রত পালন :

বৈশ্বিক করোনা মহামারীতে গোটা বিশ্ব আজ এক কঠিন সংকটকাল অতিক্রম করছে। বিশ্বব্যাপী বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। বিগত মার্চ ২০২০ থেকে শুরু হওয়া এই মরণব্যাধি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যে বিশ্বে প্রায় চল্লিশ লক্ষের অধিক লোক প্রাণ হারিয়েছে। পরিস্থিতির কারণে বিগত ১৪৪১ হিজরী ২০২০ খ্রিস্টাব্দে কোভিড-১৯ নামক নভেল করোনা ভাইরাসের কারণে সৌদি আরব সরকার আন্তর্জাতিকভাবে হজ্ব পালনকে স্থগিত করেছিল। সীমিত পরিসরে স্থানীয় ও প্রবাসীসহ কঠোর নিয়ম কানুন ও স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ করার শর্তে দেশটির হজ্ব মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ দশ হাজারের মতো লোকের অনুমতি অনুমোদন দিয়েছিল। বিশ্বব্যাপী বর্তমান সংক্রমণের হার আরো উর্ধ্বগতি হওয়ার কারণে এবারও আন্তর্জাতিকভাবে একই সিদ্ধান্ত বহাল রাখার ঘোষণা প্রচার করেছে। এবারও স্থানীয়ভাবে স্বল্প পরিসরে হজ্বের অনুমতি আশা করা যায়। বিগত দেড় হাজার বছরের ইসলামের ইতিহাসে মহামারীর কারণে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিশৃঙ্ক্ষলার কারণে, যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে, ক্ষমতার দ্বন্দ্বের কারণে, বিভিন্ন সময়ে হজ্ব স্থগিত থাকা বা সীমিত পরিসরে আয়োজন করা বা হজ্ব বন্ধ রাখার ঘটনা প্রায় ৪০ বারের মতো ঘটেছে বলেছে ঐতিহাসিক সূত্রে প্রমাণ পাওয়া যায়। বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলীর কারণে নিম্নবর্ণিত, সময়ে হজ্ব স্থগিত বা বন্ধ ছিল মর্মে প্রমাণ পাওয়া যায়। ২৫১ হিজরি ৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে আব্বাসীয় খিলাফতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের কারণে হজ্ব স্থগিত হয়। ৩২৭ হিজরি ৯৩০ খ্রি. এ বছর ত্রিশ হাজারের অধিক হজ্ব পালনকারীর উপর গণহত্যা চালানো হয়েছিল। ৩৫৭ হিজরি ৯৬৭ খ্রি. আল মাশিরি নামক এক অদৃশ্য রোগ সংক্রমণের কারণে হাজ্বীদের বহনকারী হাজার হাজার উট পথে মারা যায় ওই বছরও হজ্ব বাতিল করা হয়। ৩৯০ হিজরি ১০০০ খ্রি. ৪১৯ হিজরির ১০২৮ খৃস্টাব্দে বিশ্বব্যাপী অভাব অনটন ও চরম দুর্ভিক্ষের কারণে সেই বছরগুলোতে মানুষ হজ্বে গমন করেনি।

এভাবে ১২৫২ হিজরি ১৮৩৭ থেকে ১৩১০হি. ১৮৯২খ্রি. পর্যন্ত দীর্ঘ ৫৫ বছর সময়ে বেশ কয়েক বছর মহামারীর কারণে অসংখ্য মানুষ হজ্বে যেতে পারেনি। কলেরা মহামারীর কারণে অসংখ্য হাজী ছাহেবান আরাফা ও মিনায় ইন্তেকাল করেন। (সংক্ষেপিত)

 

প্রতিকূল পরিস্থিতিতে হজ্ব প্রসঙ্গে নবীজির নির্দেশনা:

হজ্ব আদায়ের জন্য আর্থিক সামর্থ, শারীরিক সুস্থতা, যাতায়াতের নিরাপত্তা অন্যতম শর্ত। কেউ অনুকুল পরিস্থিতিতে আর্থিক ভাবে সচ্ছল সামর্থবান দৈহিকভাবে সুস্থ হজ্ব গমনে সম্পূর্ণরূপে প্রতিবন্ধকতামুক্ত হওয়ার পরও যদি হজ্ব না করে তার জন্য প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠোর হুঁশিয়ারী সংকেত উচ্চারন করেছেন।

 

হযরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তিকে কোন অসুস্থতা অথবা কোন স্পষ্ট প্রয়োজন অথবা অত্যাচারী শাসক হজ্ব করা থেকে বিরত করেনি অথচ তবুুও সে হজ্ব করেনি সে ইচ্ছে হলে ইহুদী হয়ে মৃত্যুবরণ করুক, ইচ্ছা হলে খৃষ্টান হয়ে মৃত্যুবরণ করুক। (সুনানে দারেমী, খন্ড ২য়, পৃ: ৪০, হাদীস নং ১৭৮০, মিশকাত, হাদীস নং ২৫৩৫, বাহারে শরীয়ত, ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃ ১০৩৫, ফিকহুস সুনানি ওয়াল আছার, ১ম খন্ড, পৃ ৪৮৪, তিরমিযী শরীফ, খন্ড ১ম, পৃ: ১৬৭, আনোয়ারুল বয়ান, খন্ড ৩য়, পৃ: ২৯৮)

হজ্ব গমনকালে মৃত্যু হলে তার প্রতিদান

হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, ছরকারে দোআলম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি হজ্বের জন্য বের হয়ে মারা গেল কিয়ামত পর্যন্ত তাঁর জন্য হজ্বের সওয়াব লিখা হবে। যে ব্যক্তি উমরার জন্য বের হয়ে মারা গেল, তাঁর জন্য কিয়ামত পর্যন্ত উমরাকারীর সওয়াব লিখা হবে। (মুসনাদে আবি ইয়ালা, খন্ড ৫ম, পৃ: ৪৪১, বাহারে শরীয়ত, খন্ড ৬ষ্ঠ, পৃ: ১০৩৪, আনোয়ারুল বায়ান,খন্ড ৩য়, পৃ: ২৯৭)

হজ্ব সম্পাদনকারী কিয়ামত দিবসে সুপারিশের ক্ষমতা পাবে:

হযরত আবু মুসা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, একজন হাজী পরিবারের চারশত জনকে সুপারিশ করতে পারবে। তিনি হজ্ব দ্বারা এমন ভাবে গুনাহ থেকে বের হয়ে যাবেন, যেমন মায়ের পেট থেকে যেদিন নিষ্পাপ হয়ে বের হয়েছে। (মুসনাদে বযযার, খন্ড ৮ম, পৃ: ১৬৯, হাদীস নং ৩১৯৬, বাহারে শরীয়ত, ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃ: ১০৩২, আত্‌ তারাগীব ওয়াত তারহীব, খন্ড ২য়, পৃ: ১৬৬, আনোয়ারুল বয়ান, খন্ড ৩য়, পৃ: ২৯৬)

বর্ণিত হাদীস দ্বারা প্রতীয়মান হলো একজন মকবুল হজ্ব আদায়কারী যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে চারশত জন ব্যক্তিকে সুপারিশের ক্ষমতা প্রাপ্ত হন। কিয়ামত দিবসে হুযুর ইমাম আযম (র.) হুযুর গাউসে আজম (র.) সর্বোপরি আমাদের আক্বা ছরকারে মদীনা তাজেদারে রিসালত রাহমাতুল্লীল আলামীন শফিউল মুজনেবীন নূরনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কতো অগণিত বেশুমার গুনাহগারকে সুপরিশ করবেন তা নি:সন্দেহে সহজে অনুমেয়। (আনোয়ারুল বয়ান, খন্ড ৩য়, পৃ: ২৯৬)

মাসআলা:

হারাম সম্পদ দ্বারা হজ্ব করা নাজায়েজ ও হারাম। হজ্ব গমনে যাদের অনুমতি গ্রহণ করা ওয়াজিব যেমন পিতা-মাতা। যদি তাদের সেবা করার প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে তাদের অনুমতি ছাড়া ফরজ হজ্বে গমন করা মাকরূহ। আর যদি নফল হজ্ব হয় সেক্ষেত্রে মা বাবার অনুগত্য ও সেবা করবে। (দুররুল মুখতার, বাহারে শরীয়ত, খন্ড ৬ষ্ঠ, পৃ: ৭)

মাসআলা: মহিলা যুবতী হোক, বৃদ্ধা হোক স্বামী বা মুহরিম ছাড়া হজ্বে গমন করলে গুনাহগার হবে। (বাহারে শরীয়ত, ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃ: ১৪)

হজ্ব সম্পাদনে ব্যয় করার সওয়াব: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, হজ্বব্রত পালনে খরচ করার সওয়াব আল্লাহর রাস্তায় খরচ করার মত সাতশতগুণ বৃদ্ধি করা হয়। (আত্‌ তারগীব ওয়াত তারহীব, ২:১৬৬)

পবিত্র হজ্ব মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রতীক:

তৌহিদ ও রিসালতের স্বীকৃতির ধ্বনি মুসলমানদের পবিত্র কলেমায় বিঘোষিত। তৌহিদ ও রিসালতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনে ঈমানের পূর্ণতা। একটির গ্রহণ অপরটি বর্জন কুফরীর নামান্তর। মুসলিম উম্মাহর মহাসম্মিলন পবিত্র হজ্ব কেন্দ্রিক প্রতিটি কার্যক্রমে ইসলামের এ বাস্তবতা প্রতিফলিত। আজ বিশ্বের মুসলমানরা রাসূলের প্রদর্শিত ও অনুসৃত আদর্শ ও শিক্ষা থেকে বিচ্যুত হয়ে বাহুধা বিভক্ত, পারস্পরিক অনৈক্য, দ্বন্দ্ব, সংঘাত, আদর্শিক ঐক্যের প্রকট সংকট, মুসল্লিম উম্মাহর ঐক্য চেতনাকে ব্যবহৃত করছে, উম্মাহর শক্তিকে দুর্বল করছে। পক্ষান্তরে ইসলাম বিরোধী কুফরি শক্তিগুলো আজ ঐক্যবদ্ধভাবে বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের উপর নির্যাতনের স্টীম রোলার পরিচালনা করছে। অথচ ইসলামই বিশ্বের সকল মুসলমানকে ভাষাগত ভিন্নতা, বর্ণ, গোত্র ও জাতিগত বৈষম্য নির্মূল করে মুসলিম উম্মাহকে অখণ্ড ভাতৃসংঘরূপে আখ্যায়িত করেছে। বিদায় হজ্বের ভাষণে মানবতার কাণ্ডারী মুক্তির দিশারী প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিম উম্মাহর শান্তি সমৃদ্ধি উন্নতি কল্যাণ ও সাফল্যের সকল নির্দেশনা ব্যক্ত করেছেন। তিনি এরশাদ করেছেন, হে মানবমন্ডলী! নিশ্চয় তোমাদের প্রভু এক, তোমাদের পিতা এক, সাবধান অনারবের উপর আরবের, কৃঞ্চাঙ্গের উপর শ্বেতাঙ্গের কোন শ্রেষ্ঠত্ব বা প্রাধান্য নেই, তাকওয়া ব্যতীত।

হে মানব মন্ডলী! আমার কথা শ্রবণ করো এবং অনুধাবণ করো, জেনে রেখো! প্রত্যেক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই। মুসলমানরা পরস্পর ভাই ভাই। কাজেই নিজ ভ্রাতার কোন জিনিস খুশী মনে দান ব্যাতীত গ্রহণ করা অবৈধ। তোমরা মানুষের উপর জুলুম করো না। (ইবনে হিশাম, সীরাত ইবনে হিশাম)

নবীজির প্রদত্ত ভাষণে মানবজাতির সামগ্রিক মুক্তি ও কল্যাণের দিক নির্দেশনা রয়েছে। বিশ্ব মানব জাতির অধিকার সংক্রান্ত একটি ঐতিহাসিক দলীলের নাম বিদায় হজ্বের ভাষণ। হজ্ব মুসলিম উম্মাহকে পারস্পরিক ঐক্য সুদৃঢ় করার এক সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। মুসলিম উম্মাহর সার্বিক শান্তি, নিরাপত্তা ও শক্তিশালী নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করার এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হজ্ব। মুসলিম উম্মাহর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, জাতীয়, আন্তর্জাতিক বিরাজমান সমস্যাবলীর সঠিক সমাধান কল্পে সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণ আলোচনা পর্যালোচনা ও কার্যকরী সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে বিশ্বের মুসলিম দেশ সমূহের আন্ত:রাষ্ট্রীয় আন্তর্জাতিক সর্ব বৃহৎ সংস্থা ওআইসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। বিশ্বের ৫৭টি মুসলিম দেশ ওআইসি’র সদস্যভুক্ত। সারা বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর ঐক্যের প্রতীক পবিত্র হজ্ব হোক। মুসলিম উম্মাহর আদর্শিক চেতনার সেতু বন্ধন। মহান আল্লাহ করোনা মহামারী থেকে বিশ্ববাসীকে রক্ষা করুন।

হে আল্লাহ প্রত্যেক কে জীবনে একবার হলেও হজ্বে বায়তুল্লাহ ও আপনার প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা মুবারকের যিয়ারত নসীব করুন। আমীন।

লেখক : অধ্যক্ষ, মাদরাসা-এ তৈয়্যবিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া ফাযিল (ডিগ্রী)
খতীব, কদম মোবারক শাহী জামে মসজিদ।