শাবান মাসের ফযিলত
মাওলানা মুহাম্মদ ওসমান গণি
শাবান মাস রজব ও রমযান মাসের মধ্যবর্তী মাস। এর পূর্বের মাস রজব হল সম্মানিত চার মাসের এক মাস আর পরের মাস হল সর্বোত্তম মাস রমযান মাস। শাবান শব্দের অর্থ হল শাখা-প্রশাখা। অর্থাৎ বৃদ্ধির উপর বৃদ্ধি হওয়া। হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে এ মাসের নাম শাবান রাখার কারণ হল এ মাসে রােযা পালনকারী শাখা-প্রশাখার ন্যায় বেশী সাওয়াব প্রাপ্ত হয়। ফলে এ মাসের রােযাদার জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মা ছাবাতা বিসসুন্নাহ)
হযরত ওসামা ইবনে যায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল!
আমি আপনাকে একটি মাসে এত বেশী রােযা রাখতে দেখি অন্য মাসে এভাবে রােযা রাখতে দেখিনা। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কোন মাসে? আমি বললাম, শাবান মাসে। তিনি বললেন, শাবান হলাে রজব ও রমযান মাসের মধ্যবর্তী মাস। এ মাসে মানুষ অলস থাকে। অথচ এ মাসে বান্দার আমলসমূহ উঠানাে হয়। অতএব আমি পছন্দ করি যে, আমার আমল যখন উঠানাে হবে তখন আমি রােযাদার থাকি। (ফাযায়েলুল আওকাত)
أحب الشهور إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم أن يصومه شعبان، ثم يصله برمضانَ
হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
কেউ জিজ্ঞাসা করল ইয়া রাসূলাল্লাহ! কোন রােযা উত্তম? তিনি বললেন, শাবান মাসের রােযা উত্তম (নফল) রমযানের সম্মানার্থে। জিজ্ঞাসা করল- কোন সাদকা উত্তম? তিনি বললেন, রমযান মাসের সাদকা উত্তম। (প্রাগুক্ত)
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم ” يصُوم حتى نقول: لا يفطر، يُفْطر حتى نقول: لا يَصُوم، فمَا رأَيت رسول الله صلى الله علَيه وسلم استكمل صيّام شهر إلا مضان، وما رأيته أكثر صياما منه في شعبان
উক্ত হাদিস দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান মাসের পর সবচেয়ে বেশী রােযা রাখতেন শাবান মাসে।
হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রােযা রাখতেন। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আপনাকে শাবান মাসে বেশী রােযা রাখতে দেখেছি। উত্তরে তিনি বললেন-
ان هذا الشهر يكتب فيه لملك الموت من يقبض فأنا لا احب ان ينسخ اسمى الا وانا صائم
হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
শাবান মাস আসলে মুসলমানগণ কুরআনের প্রতি মনােনিবেশ দিত অতঃপর কুরআন তিলাওয়াত করত।(লাতায়েফুল মা’আরিফ)
মােটকথা হল রমযান মাসের পরিপূর্ণ ফযায়েল ও বরকত অর্জনের জন্য শাবান মাস থেকে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। রােযা, নামায, কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি ইবাদত করে ইবাদতে অভ্যস্ত হয়ে উঠলে রমযানে ভালভাবে ইবাদত বন্দেগীর পূর্ণস্বাদ লাভ করতে পারবে।
মাওলানা মুহাম্মদ ওসমান গণি লিখিত ‘বারো মাসের ফযিলত ও আমল’ বই থেকে সংকলিত