মহিলাদের ইতিকাফ
রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফ পুরুষের জন্য সুন্নতে মুয়াক্কাদা আলাল কিফায়া, তবে নারীদের জন্য তা মুস্তাহাব।
হজরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হজরত নবী করিম সা. তার ওফাত পর্যন্ত রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফ করতেন। তার ওফাতের পর তার স্ত্রীগণ ইতিকাফ করেছেন। (সহিহ বুখারি: ২০২৬ ও সহিহ মুসলিম: ১১৭২)
উম্মে সালাম রা. থেকে বর্ণিত রাসূল সা. বলেন-
“মেয়েদের উত্তম মাসজিদ হচ্ছে তাদের ঘরের কোণ।”
(মুসনাদে আহমদ- ২৬৫৪২, সহীহ ইবনে খুযাইমা- ১৬৮৩, তাবারানী কাবীর- ৭০৯, মুস্তাদরাক ৭৫৬)
মহিলারা ঘরে নামাজ ও অন্যান্য ইবাদতের জন্য নির্ধারিত স্থানে ইতিকাফ করবেন। যদি আগে থেকেই ঘরে নামাজের জন্য কোনো স্থান নির্ধারিত না থাকে তাহলে ইতিকাফের জন্য একটি স্থান নির্ধারিত করে নেবেন। সেখানেই ইতিকাফ করবেন। (হেদায়া: ১/২৩০, আলমগীরি: ১/২১১)
মহিলারা ঘরের যে স্থানটিকে ইতিকাফের জন্য নির্ধারিত করবেন তা মসজিদের মতো গণ্য হবে। মানবিক প্রয়োজন ছাড়া তারা সেখান থেকে বের হতে পারবেন না। মানবিক প্রয়োজন ছাড়া সে স্থানের বাইরে গেলে ইতিকাফ ফাসিদ হয়ে যাবে। (আলমগীরি: ১/২১১, বাদায়ে: ২/২৮২)
মানবিক প্রয়োজন বলতে বুঝায়, প্রস্রাব-পায়খানা, অজু। সুতরাং ইতিকাফ অবস্থায় মহিলারা প্রস্রাব-পায়খানা বা অজু করার জন্য ইতিকাফের স্থান থেকে বের হতে পারবেন।
স্বামীর অনুমতি ছাড়া মহিলাদের ইতিকাফ জায়েজ হবে না। বিবাহিত নারীকে রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফ বা অন্য সময়ের নফল ইতিকাফের জন্য স্বামীর অনুমতি নিতে হবে। স্বামীদের উচিত, যুক্তিসঙ্গত ও গ্রহণযোগ্য কারণ ছাড়া স্ত্রীদের ইতিকাফে বাধা না দেওয়া। তাদের ইতিকাফের সুযোগ দেওয়া। এতে কিন্তু উভয়ই সওয়াব পাবেন। (শামী: ৩/৪২৯, আলমগীরি: ১/২১১)
স্বামী স্ত্রীকে ইতিকাফের অনুমতি দেওয়ার পর আর বাধা দিতে পারবেন না। বাধা দিলেও সে বাধা মানা স্ত্রীর জন্য জরুরি নয়। (শামী: ৩/৪২৮, আলমগীরি: ১/২১১)
মহিলাদের ইতিকাফের জন্য হায়েজ-নেফাস থেকে পবিত্র হওয়া শর্ত। হায়েজ, নেফাস অবস্থায় ইতিকাফ সহীহ হবে না। (বাদায়ে: ২/২৭৪, আলমগীরি: ১/২১১)