মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাসুম
দিনটি ছিল হিজরী দ্বিতীয় সনের ১৭ রমযান শুক্রবার। বদর যুদ্ধের পূর্বরাত। সৈন্যদের শ্রেণীবিন্যাস শেষ হয়েছে। সবাই ক্লান্ত-শ্রান্ত। হঠাৎ বৃষ্টি এলো। মুসলিম বাহিনী ঘুমে এলিয়ে পড়ল। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন বাহিনীর সকল ক্লান্তি দূর হয়ে গেল এবং যুদ্ধের জন্য দেহমন প্রসস্ত হয়ে গেল। বালু-কংকর সব জমে শক্ত হয়ে গেল। ফলে চলাফেরায় স্বাচ্ছন্দ্য এলো। সেই সাথে অধিক হারে পানি সঞ্চয়ের ব্যবস্থা হয়ে গেল।এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন: ”স্মরণ কর সে সময়ের কথা, যখন তোমাদের স্বস্তির জন্য তাঁর পক্ষ থেকে তোমাদেরকে তন্দ্রায় আচ্ছন্ন করা হয় এবং তোমাদের উপরে তিনি আসমান হতে বারি বর্ষণ করেন। তোমাদেরকে পবিত্র করার জন্য, তোমাদের থেকে শয়তানের কুমন্ত্রণা দূরীভূত করার জন্য। তোমাদের হৃদয়গুলি পরস্পরে আবদ্ধ করার জন্য এবং তোমাদের পা গুলো দৃঢ় রাখার জন্য”। (সূরা আন‘ফাল,আয়াত:১১)
পরদিন প্রভাতে ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন হযরত বেলাল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু’র সুললিত কন্ঠে ফজরের আযান ধ্বনিত হল। মুজাহিদগণ কাতারবন্ধি হয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইমামতিতে নামাজ আদায় করলেন। নামাযান্তে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিগলিত চিত্তে অশ্রুসিক্ত নয়নে বারেগাহে ইলাহীতে প্রার্থনা করলেন: “হে আল্লাহ! আমার এ স্বল্প সংখ্যক সাহাবী যদি শহীদ হয়ে যায়, তবে আপনার নাম কে নেবে? আমি আপনার নামে সাহায্য প্রার্থনা করছি। ”
এ প্রার্থনার জবাবে মহান আল্লাহ তায়ালা সাহায্যের প্রতিশ্রুতি প্রদান করলেন। (সূরা আনফাল, আয়াত:৭) হযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহুর্তের জন্য তন্দ্রামগ্ন হলে দেখতে পান সাদা পাগড়ী পরিহিত এক হাজার ফেরেস্তা মুজাহিদগণের সাহায্যার্থে অবতীর্ণ হয়েছে। এরপর ফেরেস্তাদের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে তিন হাজার ও পাঁচ হাজারে উন্নীত হল। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত:১২৩-১২৫) নূরনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাদের এ সুসংবাদ প্রদান করলেন যে,
“আল্লাহ তায়ালা আমাকে বিজয়ের আশ্বাস দিয়েছেন। আমি কুরাইশদের ৭০ জন সর্দারের নিহত হওয়ার স্থানও দেখতে পাচ্ছি। এ কথা বলে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাতের লাঠি মুবারক দ্বারা এক একটি জায়গা চিহ্নিত করে বললেন-এটি আবু জাহেলের ভূলুন্ঠিত হওয়ার জায়গা, এটি উতবার, ঐটি অলিদের, অমুক জায়গা শায়বার বধ্যভূমি হবে ইত্যাদি-[যার বাস্তব প্রমাণ যুদ্ধ শেষে সাহাবায়ে কেরাম প্রতক্ষ করে আল্লাহ প্রদত্ত নবীজির ইলমে গায়েব দেখে নিজেদের ঈমান আরো সুদৃঢ় করেছিলেন।”(সহিহ মুসলিম, হাদীস: ২৮৭৩,৪৪৭০)]।
এ ভবিষ্যত বাণী শুনে মুজাহিদগণের মনোবল বেড়ে গেলো। অপরদিকে কুরাইশ বাহিনী যখন মুসলিম বাহিনীর নিকটবর্তী হয়েছিলো, তখন আবু জাহেল আল্লাহর নিকটে প্রার্থনা করে বলেছিলো,‘হে আল্লাহ! আমাদের মধ্যকার অধিক আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী এবং অজানা বিপদ সমূহের আনয়নকারী যে দল, তুমি তাদেরকে আগামীকাল সকালে ধ্বংস করে দাও’। এভাবে সে নিজের প্রার্থনা দ্বারা নিজের উপর ধবংস ডেকে নিলো।
অত:পর যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য যখন রাসুলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুজাহিদ বাহিনীকে সারিবদ্ধ করে সজ্জিত করছেন, তখন দুজন বালক যুদ্ধে যাওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করল। নবীজি তাদের স্বান্তনা দিয়ে পরবর্তী কোন এক যুদ্ধে তাদের নেয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তাদের একজন পায়ের আঙ্গুলের উপর ভর করে লম্বা হয়ে দাঁড়ালো । রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর আগ্রহ দেখে অভিভূত হয়ে তাঁকে জিহাদের কাফেলায় অর্ন্তভূক্ত করে নিলেন। এ অবস্থা দেখে অপরজন বলল, সে লম্বা হলে কি হবে মল্লযুদ্ধে সে আমার সাথে পারবে না। এ বলে সে মল্লযুদ্ধে তাঁকে হারিয়ে দিলো। প্রবল আগ্রহ ও আত্মবিশ্বাস দেখে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকেও সেনাবাহিনীতে যুক্ত করে নিলেন। এ ছিল তৎকালীন কিশোর বালকদের নবীপ্রেমের বাস্তব নমুনা। তারপর হুযূর পুরনূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুজাহিদবাহিনীকে লক্ষ্য করে ইরশাদ করেন: “চূড়ান্ত নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কেউ যুদ্ধ শুরু করবে না। ব্যাপক হারে তীরবৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত কেউ তীর ছুঁড়বে না এবং তোমাদের উপরে তরবারি ছেয়ে না যাওয়া পর্যন্ত তরবারি চালাবে না’। তিনি আরো ইরশাদ করেন, বনু হাশেমকে জোর করে যুদ্ধে আনা হয়েছে। তাঁদের সাথে আমাদের কোন যুদ্ধ নয়। অতএব তাঁদের কোন ব্যক্তি সামনে পড়ে গেলে তাঁকে যেন কেউ আঘাত না করে। হযরত আববাসকে যেন হত্যা করা না হয়। অনুরূপভাবে আবুল বুখতারী বিন হেশামকেও হত্যা করো না। কেননা এরা মক্কায় আমাদের কোনরূপ কষ্ট দিত না। বরং সাহায্যকারী ছিল। “
অতঃপর লাল উটের উপরে সওয়ার উৎবা বিন রাবী‘আহর দিকে উদ্দেশ্য করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন ‘যদি তার দল তার আনুগত্য করত, তাহলে তারা সঠিক পথে থাকতো’। অর্থাৎ যদি তারা উৎবাহর কথামত মক্কায় ফিরে যেত, তাহলে তাদের মঙ্গল হত। এর মধ্যে রাসূলের শান্তিবাদী নীতি ফুটে ওঠে। এই সময় বদর যুদ্ধের যে পতাকা রাসূলের হাতে ছিল, তা ছিল হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহার ওড়না দিয়ে তৈরী।”
শুরু হলো তুমুল যুদ্ধ। চারিদিকে শত্রুকে খুঁজে চলেছে সবাই। কেউ কারো দিকে নজর দিতে পারছেনা। প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবদুর রহমান ইবনে আ’উফ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুও এক জায়গায় দাঁড়িয়ে লক্ষ্য করেছিলেন, শত্রুকে কিভাবে ঘায়েল করা যায়। হঠাৎ দেখলেন, তাঁর দু’পাশে এসে দাঁড়ালো দুটি বালক। তিনি বালক দু’জনের দিকে তাকালেন । আর ভাবলেন, এরা তো নিতান্তই বালক ! এরা যুদ্ধ করবে কিভাবে ! ! ! তিনি ভাবছিলেন, যদি তার আশে-পাশে আরো শক্তসমর্থ মুসলমান থাকতেন, তাহলে কাফেরদের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানোর সময় একজন আরেকজনকে সহযোগিতা করতে পারতেন; কিন্তু সেই কাজ কি এই বালক দু’জনকে দিয়ে সম্ভব ? বালক দু’জন সম্পর্কে তিনি যখন এ ধরনের ভাবনা ভাবছিলেন, তখনই সাহসী জননীর এ দু’সন্তান তাঁর নিকট জিজ্ঞেস করলেন, চাচাজান! আপনি কি আবু জাহেলকে চিনেন? জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ, চিনি। কিন্তু আবু জাহেলকে তোমাদের কী প্রয়োজন ?’ বালকদ্বয় বললো,“আমরা শুনেছি, আবু জাহেল আমাদের প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গালা গালি করে । রাসূলের নামে আজে-বাজে কথাবার্তা বলে বেড়ায়। আল্লাহর কসম ! যদি আবু জাহেলকে দেখতে পাই, তবে তার জীবন খতম করার আগে আমরা ক্ষ্যান্ত হবো না । যদি তাকে খতম করতে না পারি তবে নিজেই শহীদ হয়ে যাবো।” বালকদ্বয়ের কথা শুনে আবদুর রহমান ইবনে আ’উফ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু অবাক হয়ে গেলেন। অল্প বয়সী বালক!!! অথচ কী অসামান্য সাহস !!! তখনই দেখলেন, যুদ্ধের ময়দানে ঘোড়ায় চড়ে ছূটে বেড়াচ্ছে আবু জাহেল। সাহাবীয়ে রাসুল তাঁদেরকে বললেন, ঐ যে লোকটি ঘোড়ায় চড়ে যুদ্ধের তদারকী করছে, সেই আবু জাহেল। বালকদ্বয় আবু জাহেলকে দেখা মাত্রই বাজপাখীর মতো তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। বালক দু’জনের পক্ষে ঘোড়ায় চড়ে থাকা আবু জাহেলের শরীরে সরাসরি আঘাত করা ছিল অসম্ভব। তাই একজন আক্রমণ করল আবু জাহেলের ঘোড়ায় – আরেকজন আবু জাহেলের পায়ে খোলা তলোয়ার দিয়ে আঘাত করল। মুহূর্তের মধ্যেই কাফের সর্দার আবু জাহেল মাটিতে গড়িয়ে পড়ল । মাটিতে পড়েই ছটফট করতে লাগল আবু জাহেল । বালক দু’জন সমানতালে তাকে আঘাত করে চলল। কিন্তু আবু জাহেল তখনো জীবিত ছিল। এ অবস্থা দেখে হযরত আবদল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তরিৎ গতিতে এসে এক আঘাতে আবু জাহেলের শিরচ্ছেদ করে তাকে জাহান্নামে পাঠিয়ে দেন। (তাফসীরে রুহুল বয়ান) আর সাহসী কিশোর দু’জনের মধ্যে একজনের নাম মা’আয । অপর জনের নাম মোয়াওয়ায । এ প্রসঙ্গে হযরত মোয়াজ বিন আফরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, “আমি আবু জাহেলের ঘোড়ার সামনের দুই পায়ে আঘাত করার ফলে সে মাটিতে পড়ে যায়। আর হযরত মোয়াওয়াজ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তরবারীর আঘাতে তাকে ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলে”। এমনিভাবে ইসলামের চিরশত্রু মক্কার কাফেরদের দলনেতা অভিশপ্ত আবু জাহেল ছোট্ট দুই বীর মুজাহিদের হাতে নিহত হয়। একই বলে কাঁদায় পড়ে হাতীর মৃত্যু। এ দুই কিশোরের মাঝে সেদিন নূরনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি অকৃত্রিম প্রেম ও ভালবাসা প্রবলবেগে সঞ্চারিত হয়েছিল বলেই ইসলামের প্রথম যুদ্ধে তাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এবং অভিশপ্ত আবু জাহেলকে হত্যা করে ইতিহাসের পাতায় নিজেদের স্থান করে নিল।
এটি ছিল ইসলামের প্রথম বড় যুদ্ধ। এই যুদ্ধে মুসলমানদের সংখ্যা ছিল মাত্র ৩১৩ জন। ঘোড়া ছিল মাত্র তিনটি আর উট ছিল সত্তরটি। আবু জাহেল বাহিনীর সংবাদ পেয়ে হুযূর পুরনূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বল্প সংখ্যক সাহাবাদের নিয়ে বদর ময়দানে মদীনা শরীফের উত্তরাংশে আল আরিসা পাহাড়ের পাদদেশে শিবির স্থাপন করেন। আর রাসূলে আরবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেনা সমাবেশের জন্য এমন একটি জায়গাই বেছে নেন, যেখানে সূর্যোদয়ের পর যুদ্ধ হলে কোনো মুসলমান সেনার চোখে সূর্য কিরণ পড়বে না। যদিও সেটি ছিল যুদ্ধের জন্য অনুপযুক্ত স্থান। কেননা জায়গাটি ছিল বালুকাময় এবং পানিশূন্য। পক্ষান্তরে আবু জাহেলের নেতৃত্বাধীন কুরাইশ বাহিনী বদর প্রান্তরের দক্ষিণে মক্কার দিকে নিম্ন ভূমিতে সুবিধামত স্থানে তাঁবু স্থাপন করল। সেনাপতি ছিল ওতবা বিন রবিআ, সংখ্যা ছিল এক হাজার, ঘোড়া ছিল একশ, ছয়শ বর্মধারী এবং একদল গায়িকা ছিল যারা বাদ্যযন্ত্র সহ বদরপ্রান্তে উপস্থিত ছিল। আল্লাহর হুকুমে রাত্রে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় উচু ভূমির বালি হলো শক্ত এবং মুসলমানগণ গর্ত করে প্রয়োজনীয় পানি আটকে রাখেন।
এ সময় মদীনায় আমীর নিযুক্ত হন অন্ধ সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতূম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু । পরে ‘রাওহা’ নামক স্থানে পৌঁছে আবু লুবাবা ইবনু আবদিল মুনযিরকে ‘আমীর’ নিযুক্ত করে পাঠানো হয়। অপর পক্ষে কাফেলার পতাকা বহনের দায়িত্ব দেওয়া হয় মদীনার প্রথম দাঈ হযরত মুসআব বিন উমায়ের রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে। ইতিপূর্বেকার সকল পতাকার ন্যায় আজকের এ পতাকাও ছিল শ্বেত বর্ণের। ডান বাহুর সেনাপতি নিযুক্ত হন যুবায়ের ইবনুল ‘আওয়াম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এবং বাম বাহুর জন্য মিক্বদাদ ইবনুল আসওয়াদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু। পুরা বাহিনীতে এ দু’জনেরই মাত্র দু’টি ঘোড়া ছিল। আর পশ্চাদ্ভাগের সেনাপতি নিযুক্ত হন ক্বায়েস ইবনু আবী ছা‘ছা‘আহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু । এতদ্ব্যতীত মুহাজিরগণের পতাকা বাহক হন আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এবং আনছারগণের সা‘দ ইবনু মু‘আয রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু । আর সার্বিক কমান্ডের দায়িত্বে থাকেন স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
রাসুলে আরবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দোয়া ও মহান আল্লাহ তায়ালার সাহায্যে ৩১৩ জনের স্বল্প সংখ্যক মুজাহিদ বাহিনী সেদিন এক হাজার দূধর্ষ যোদ্ধার বিশাল বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভ করতে সক্ষম হয়। এ যুদ্দে ৭০ জন কাফির নিহত এবং ৭০ জন বন্দি হয়েছে। মুসলমানদের মধ্যে ১৪ জন শহীদ হয়েছিলেন। তন্মধ্যে ৬ জন ছিল মুহাজির এবং ৮ জন ছিল আউস-খাজরাজ গোত্রের আনসার সাহাবী। (সূরা আলে ইমরান;সহিহ বুখারী, কিতাবুল মাগাযী;সীরাতে ইবনে হিশাম; বিদায়া ওয়ান নিহায়া;আর রাহীকুল মাখতুম)
আমরা যদি ঈমানী বলে বলীয়ান হয়ে বদরী সাহাবাদের চেতনাকে বুকে ধারণ করে শরীয়ত বিরোধী সকল অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই, তবেই তা হবে তাঁদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন। পরিশেষে মহান রব্বুল ইজ্জতের নিকট ফরিয়াদ – হে আল্লাহ! বদরী সাহাবীদের উসিলায় আমাদের পাপরাশি ক্ষমা করে বিশ্ববাসীকে এই মহামারী কেভিড-১৯ থেকে পরিত্রাণ দিন এবং এ রোগে মৃত্যুবরণকারী মুসলিমদের শহীদী কাফেলায় যুক্ত করে নিন। আমিন বিহুরমাতি সৈয়্যদিল মুরসালিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
লেখক: আরবী প্রভাষক, রাণীরহাট আল আমিন হামেদিয়া ফাযিল (ডিগ্রি) মাদরাসা।