পবিত্র মাহে রমযানের প্রস্তুতি
সৈয়দ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন আল আযহারী
জুমার খুতবা
৪র্থ জুমা, শাবান ১৪৪২ হি, ৯ এপ্রিল, ২০২১ইং
পবিত্র মাহে রমযানের প্রস্তুতি
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রতি বছরের মতো এ বছরও কিছু দিন পরই রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে আসছে মাহে রমযান। মুমিনের আত্মাকে আল্লাহ তাআলা ধুয়ে-মুছে পাক-সাফ করে তার রঙে রঙিন করে তুলবেন। আর যারা খোদাপ্রেমিক তাদেরও অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে না। তাঁরা শুধুই ভাবছেন, কোন দিন থেকে শুরু হবে রমযান এবং কিভাবে তাঁরা নিজেদেরকে পূত-পবিত্র করে গড়ে তুলবেন এ মাসে। তাঁদের আখলাককে উন্নততর, মহত্তর, পবিত্রতর করে ইহকাল ও পরকালের কল্যাণ সাধন করবেন। পরম করুণাময়ের সন্তুষ্টির জন্য গরিবের প্রতি সহমর্মী, ধৈর্যশীল ও সহনশীল হবেন। চারিত্রিক গুণাবলি আরো শাণিত করবেন। সিয়াম সাধনার কঠোর সংযমের সিঁড়ি বেয়ে পরহেজগারির শীর্ষ চূড়ায় আরোহণ করবেন। এটা মহিমান্বিত মাস, যাতে আল্লাহ পাক রোযা ফরয করেছেন।
عن أبي هُرَيْرَة رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : إِذَا دَخَلَ شَهْرُ رَمَضَانَ فُتِّحَتْ أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ جَهَنَّمَ وَسُلْسِلَتْ الشَّيَاطِينُ)
. رواه البخاري في الصوم باب هل يقال رمضان (১৭৬৬) ، والنسائي في الصيام (২০৭৯) و (২০৮১(
“এ মাসে বেহেশ্তের দরজাগুলো খোলা থাকে আর দোজখের দরজাগুলো বন্ধ থাকে এবং শয়তান কে শিকল পরিয়ে রাখা হয়।”
(বুখারী-১৭৬৬, নাসায়ী-২০৭৯, ২০৮১)
(ابن ماجه: كتاب الصيام، باب ما جاء في فضل شهر رمضان (১৬৪৪)، انظر: مصباح الزجاجة في زوائد ابن ماجه (২/৬২).
“তোমাদের সামনে রমযানের পবিত্র মাস , এখানে হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ট রাত রয়েছে। যে ব্যক্তি এর মহিমাকে অস্বীকার করল, মুলত সে বঞ্চিত!” (ইবনু মাযাহ-১৬৪৪)
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا دَخَلَ رَجَبٌ قَالَ: اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي رَجَبٍ، وَشَعْبَانَ، وَبَلِّغْنَا رَمَضَانَ
روى عبد الله بن الإمام أحمد في “زوائد المسند” (২৩৪৬) والطبراني في “الأوسط” (৩৯৩৯) والبيهقي في “الشعب” (৩৫৩৪) وأبو نعيم في “الحلية” (৬/২৬৯)।
রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ ঘোষণার প্রেক্ষিতেই বিশ্বের মুসলমানরা রমযান আসার আগে থেকেই এর জন্য প্রতি বছর প্রস্তুতি শুরু করে দেন। সাহাবায়ে কেরামের পর তাবেয়ীন, তাবে তাবেয়ীন, মুহাদ্দিসীন, আইম্মায়ে মুজাতাহিদীনসহ সর্বস্তরের মুসলমানগন নিজ নিজ পরিসরে রমযানের প্রস্তুতি নিয়ে সেই ধারা অব্যাহত রেখেছেন।
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : ” أَتَاكُمْ رَمَضَانُ شَهْرٌ مُبَارَكٌ فَرَضَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلَيْكُمْ صِيَامَهُ , تُفْتَحُ فِيهِ أَبْوَابُ السَّمَاءِ , وَتُغْلَقُ فِيهِ أَبْوَابُ الْجَحِيمِ , وَتُغَلُّ فِيهِ مَرَدَةُ الشَّيَاطِينِ , لِلَّهِ فِيهِ لَيْلَةٌ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ,مَنْ حُرِمَ خَيْرَهَا فَقَدْ حُرِمَ “)رواه النسائي ( ২১০৬ ) وأحمد (৮৭৬৯) صحيح الترغيب ( ৯৯৯( .
অন্য এক হাদিসে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
السيوطي في الجامع الصغير لأبي الفتح بن أبي الفوارس. رواه الدَّيلمي عن عائشةَ رضي الله عنها، جامع المسانيد والمراسيل
“রজব আল্লাহর মাস, শাবান আমার মাস এবং রমযান আমার উম্মতের মাস” (সুয়ূতী: জামে আস সগীর)।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা শাবান মাসের শেষ দিনে সাহাবায়ে কিরামকে লক্ষ্য করে মাহে রমযানের রোযার ফযিলত সম্পর্কে অবহিত করতে গিয়ে এরশাদ করেন,
فَقَالَ : ” أَيُّهَا النَّاسُ ، إِنَّهُ قَدْ أَظَلَّكُمْ شَهْرٌ عَظِيمٌ ، فِيهِ لَيْلَةٌ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ جَعَلَ اللَّهُ صِيَامَهُ فَرِيضَةً ، وَقِيَامَ لَيْلِهِ تَطَوُّعًا ، مَنْ تَقَرَّبَ فِيهِ بِخَصْلَةٍ مِنَ الْخَيْرِ كَانَ كَمَنْ أَدَّى فَرِيضَةً فِيمَا سِوَاهُ ، وَمَنْ أَدَّى فِيهِ فَرِيضَةً كَانَ كَمَنْ أَدَّى سَبْعِينَ فَرِيضَةً فِيمَا سِوَاهُ ، وَهُوَ شَهْرُ الصَّبْرِ ، وَالصَّبْرُ ثَوَابُهُ الْجَنَّةُ
প্রকৃতপক্ষে পবিত্র মাহে রমযান মুসলমানদের জন্য একটি বার্ষিক প্রশিক্ষণ কোর্স, যার মাধ্যমে রোযাদারদের জীবন প্রভাবিত হয়। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“যে ব্যক্তি পবিত্র রমযান মাস ভালোভাবে যাপন করবে, তার সমগ্র বৎসর ভালোভাবে যাপিত হবে।”(হিলয়া-৭/১৪০)।
তিনি আরও বলেন,
“আমার উম্মত যদি মাহে রমযানের গুরুত্ব বুঝত, তাহলে সারা বছর রমযান কামনা করত।”(মাজমাইয যাওয়ায়েদ-৩/১৪১, আল পাওয়ায়েদ: শাওকানী-১/২৫৪)
তাই মাহে রমযানে রোযার প্রস্তুতির জন্য সহিহ-শুদ্ধভাবে আবশ্যকীয় বিধি-বিধান শরিয়তের মাসআলা অনুযায়ী রোযাদারদের প্রয়োজনীয় জ্ঞান থাকা খুবই দরকার। এ ছাড়া আসন্ন মাহে রমযানের পবিত্রতা রক্ষার্থে ইবাদত- বন্দেগি তথা সাহরী, ইফতার, তারাবিহ, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, ই’তিকাফ, তাহাজ্জুদ, জিকর-আযকার, তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-ইস্তেগফার, দরূদ শরীফ, যাকাত-ফিতরা, দান- সাদ্কা প্রভৃতি সৃষ্টিকর্তার হক আদায়ের সামগ্রিক পূর্বপ্রস্তুতি নেওয়া উচিত।
عَنْ سَلْمَانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ، قَالَ : خَطَبَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي آخِرِ يَوْمٍ مِنْ شَعْبَانَ ، فَقَالَ : ” أَيُّهَا النَّاسُ ، إِنَّهُ قَدْ أَظَلَّكُمْ شَهْرٌ عَظِيمٌ ، فِيهِ لَيْلَةٌ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ جَعَلَ اللَّهُ صِيَامَهُ فَرِيضَةً ، وَقِيَامَ لَيْلِهِ تَطَوُّعًا ، مَنْ تَقَرَّبَ فِيهِ بِخَصْلَةٍ مِنَ الْخَيْرِ كَانَ كَمَنْ أَدَّى فَرِيضَةً فِيمَا سِوَاهُ ، وَمَنْ أَدَّى فِيهِ فَرِيضَةً كَانَ كَمَنْ أَدَّى سَبْعِينَ فَرِيضَةً فِيمَا سِوَاهُ ، وَهُوَ شَهْرُ الصَّبْرِ ، وَالصَّبْرُ ثَوَابُهُ الْجَنَّةُ ، وَشَهْرُ الْمُوَاسَاةِ ، وَشَهْرٌ يُزَادُ فِي رِزْقِ الْمُؤْمِنِ فِيهِ ، مَنْ فَطَّرَ فِيهِ صَائِمًا كَانَ لَهُ مَغْفِرَةً لِذُنُوبِهِ وَعِتْقَ رَقَبَتِهِ مِنَ النَّارِ ، وَكَانَ لَهُ مثل أَجْرِهِ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْقُصَ مِنْ أَجْرِهِ شَيْءٌ ” ، قَالُوا : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، لَيْسَ كُلُّنَا نَجِدُ مَا يُفَطِّرُ الصَّائِمَ ؟ قَالَ : ” يُعْطِي اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ هَذَا الثَّوَابَ مَنْ فَطَّرَ صَائِمًا عَلَى مَذْقَةِ لَبَنٍ أَوْ تَمْرَةٍ أَوْ شَرْبَةِ مَاءٍ ، وَمَنْ أَشْبَعَ صَائِمًا سَقَاهُ اللَّهُ مِنْ حَوْضِي شَرْبَةً لا يَظْمَأُ حَتَّى يَدْخُلَ الْجَنَّةَ ، وَهُوَ شَهْرٌ أَوَّلُهُ رَحْمَةٌ وَأَوْسَطُهُ مَغْفِرَةٌ وَآخِرُهُ عِتْقٌ مِنَ النَّارِ مَنْ خَفَّفَ فِيهِ عَنْ مَمْلُوكِهِ غَفَرَ اللَّهُ لَهُ وَأَعْتَقَهُ مِنَ النَّارِ )، فضائل الأوقات للبيهقي গ্ধ بَابٌ فِي فَضْلِ لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ … رقم الحديث: ৩৯, هذا الحديث رواه ابن خزيمة بلفظه في صحيحه ৩/১৯১ رقم (১৮৮৭, رواه المحاملي في أماليه (২৯৩) والبيهقي في شعب الإيمان (৭/২১৬) وفي فضائل الأوقات ص ১৪৬ رقم ৩৭ وأبو الشيخ ابن حبان في كتاب ( الثواب ) عزاه له الساعاتي في ( الفتح الرباني ) (৯/২৩৩) وذكره السيوطي في ( الدر المنثور ) وقال : أخرجه العقيلي وضعفه ) والأصبهاني في الترغيب ، وذكره المنقي في ( كنز العمال ) ৮/৪৭৭ ، كلهم عن طريق سعيد بن المسيب عن سلمان الفارسي ، )
প্রিয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
রামাযান মাসের প্রথম রাত্রি সমাগত হতেই শয়তান ও দুষ্টমতি জ্বিনগুলো শৃঙ্খলিত হয় এবং জাহান্নামের দ্বারগুলো রুদ্ধ করে দেয়া হয়, একটি দরজাও মুক্ত থাকে না। আর বেহেশতের দ্বারগুলো খুলে দেয়া হয়, তার একটাও বন্ধ থাকে না। আর কোন একজন গায়েবী আহ্বানকারী উচ্চঃস্বরে বলতে থাকেন যে, ‘হে পুণ্যার্থীগন অগ্রসর হও! হে পাপাত্মার দল পিছিয়ে যাও! এই সময় আল্লাহর পক্ষ হতে বহু দোযখী মুক্তিপ্রাপ্ত হয়। এমনি করে প্রত্যেক রাত্রিতেই আহ্বান করা হয়। ( তিরমিযী-৬৮২, ইবনু খোযাইমা-১৮৮৩, ইবনু হিব্বান-৮/২২১, হাকেম-১৫৩২)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ” رواه البخاري ৩৮ ومسلم ৭৬০
‘যে ব্যক্তি রামাযান মাসে ঈমানের সাথে ও ছওয়াবের আশায় রোযা রাখে, তার অতীত গোণাহ মাফ হয়ে যায়। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন,
“مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ”
(البخاري: كتاب صلاة التراويح، باب فضل من قام رمضان، (১৯০৫)، عن أبي هريرة رضي الله عنه، ومسلم: كتاب صلاة المسافرين وقصرها، باب الترغيب في قيام رمضان وهو التراويح، (৭৫৯).
আর যে ব্যক্তি এই মাসে ঈমানসহ ছওয়াবের আশায় রাত জেগে (তারাবীহ) নামায পড়ে, তার অতীত সকল গোনাহ মাফ করে দেয়া হয়। (বুখারী-১৯০৫, মুসলিম-৭৫৯)
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” مَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ” )رواه البخاري في كتاب الصوم – باب من صام رمضان إيماناً واحتساباً ونية برقم (১৮০২)، ومسلم في كتاب صلاة المسافرين وقصرها – باب الترغيب في قيام رمضان وهو التراويح برقم (৭৬০(
যে ব্যক্তি ক্বদর রাতে ঈমানের সাথে ছওয়াবের আশায় রাত জাগরণ করে নামায পড়ে, তারও অতীত সকল গোনাহ মাফ করে দেয়া হয়।’ (বুখারী-১৮০২, মুসলিম-৭৬১)
হযরত নবীয়ে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
عن أَبي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : قَالَ اللَّهُ : كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ لَهُ إِلا الصِّيَامَ فَإِنَّهُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ يَدَعُ طَعَامَهُ وَشَهْوَتَهُ مِنْ أَجْلِي) روى البخاري (১৭৬১) ومسلم (১৯৪৬)(
‘মানুষের প্রত্যেক সৎকর্মের ছওয়াব দশ হতে সাতশত গুণ বৃদ্ধি হয়ে থাকে। তবে আল্লাহ বলেন, ‘কেবল রোযা ব্যতীত। কেননা তা একমাত্র আমার জন্য সুতরাং তার পুরস্কার আমিই আমার কুদরতের স্বহস্তে প্রদান করব। যেহেতু রোযাদার স্বীয় কামপ্রবৃত্তিকে দমন ও পানাহার পরিহার করে থাকে কেবলমাত্র আমারই জন্য।’ (বুখারি-১৭৬১, মুসলিম-১৯৪৬)
হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ يَفْرَحُهُمَا : إِذَا أَفْطَرَ فَـرِحَ ، وَإِذَا لَقِيَ رَبَّهُ فَرِحَ بِصَوْمِه
‘রোযাদারের জন্য দুইটি আনন্দ। একটি ইফ্তার কালে এবং অপরটি আল্লাহর সাথে দীদারকালে।’(বুখারি-১৭৬১, মুসলিম-১৯৪৬)
তিনি আরো বলেন,
وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَخُلُوفُ فَمِ الصَّائِمِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللهِ مِنْ رِيحِ الْمِسْك .
‘রোযাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মেশ্ক হতেও অধিক সুগন্ধময়।(বুখারি-১৭৬১, মুসলিম-১৯৪৬)
তিনি বলেন,
وَالصِّيَامُ جُنَّـةٌ ، وَإِذَا كَانَ يَوْمُ صَوْمِ أَحَدِكُمْ فَلا يَرْفـثْ ، وَلا يَصْخَبْ ، فَإِنْ سَابَّهُ أَحَدٌ أَوْ قَاتَلَهُ فَلْيَقُلْ : إِنِّي امْرُؤٌ صَائِم .
(রোযাদারগণের পক্ষে) রোযা হচ্ছে ঢালস্বরূপ।’ (বুখারি শরিফ) সুতরাং তোমাদের মধ্যে কেউই রোযা অবস্থায় নির্লজ্জ কথা বলবে না এবং বাজে বকবে না। যদি কেউ রোযাদারকে গালি দেয় অথবা তার সাথে লড়াই করতে আসে, তবে সে যেন বলে দেয় যে, আমি রোযাদার। (বুখারি-১৭৬১, মুসলিম-১৯৪৬)
হযরত নবীয়ে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالْعَمَلَ بِهِ وَالْجَهْل فَلَيْسَ لِلَّهِ حَاجَةٌ فِي أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ ) . روى البخاري (১৯০৩১৮০৪-) (৬০৫৭)
‘যে ব্যক্তি রোযা অবস্থায় মিথ্যা কথা ও মিথ্যা কাজ হতে বিরত রইল না, তার উপবাসে আল্লাহর কিছুই যায় আসে না।’((বুখারি-১৮০৪, ১৯০৩, ৬০৫৭)
তিনি সাবধান করে বলেন,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , قَالَ : ” رُبَّ صَائِمٍ لَيْسَ لَهُ حَظٌّ مِنْ صَوْمِهِ إِلَّا الْجُوعُ وَالْعَطَشُ ، وَرُبَّ قَائِمٍ لَيْسَ لَهُ حَظٌّ مِنْ قِيَامِهِ إِلَّا السَّهَرُ وَالنَّصَبُ ”
رواه ابن ماجه في سننه (১৬৯০) عن عمرو بن رافع والنسائي في الكبرى (২/২৩৯/رقم৩২৫০) ورواه النسائي في الكبرى (২/২৩৯/رقم৩২৫১) ورواه أحمد في مسنده (২/৪৪১)
‘বহু রোযাদার এমনও রয়েছে, যে ক্ষুধায়-পিপাসায় কষ্ট পাওয়া ব্যতীত তাদের রোযা রাখায় আর কোন ফল নেই। এমনিভাবে বহু রাতজাগা নামাযী রয়েছে, যাদের রাত জাগরণ ব্যতীত অন্য কোন লাভ হয় না।’ হযরত নবীয়ে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ রব্বুল আ’লামীন বলেন, যে রোযাদারের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আমার নিষিদ্ধ বস্তুসমূহ হতে বিরত থাকল না, তার শুধু পানাহার হতে বিরত থাকায় কোন লাভ নেই।’ (ইবনু মাযা-১৬৯০, নাসায়ী- ৩২৫০, আহমদ-২/৪৪১(
আমরা যখন এ মাসের গুরুত্ব অনুভব করলাম তখন আমাদের কর্তব্য হয়ে দাঁড়াল কীভাবে এ মাসের প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগানো যায় সে প্রচেষ্টা চালানো। হেদায়াতের আলোকবর্তিকা আল-কোরআনও নাযিল হয়েছে এ মাসে ।